কুরবানীর হুকুম ও বিধি বিধানঃ মুফতী তাহমীদ শামী- (২য় পর্ব) - আইসিটিনোহাম

শিরোনাম

Post Top Ad

ইটাপোতা কলোনী জামে মসজিদ কম্প্লেক্স এন্ড তা’লিমুল কোরআন নুরানী ও হাফিজিয়া মাদ্রাসা- এখানে শিশু হইতে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি চলিতেছে, হিফয বিভাগে শুধুমাত্র ছাত্র ভর্তি চলিতেছে। যোগাযোগে-মুহতামিম অত্র মাদ্রাসা

পরিচিতি

পরিচিতি

মাদ্রাসার ফটক

প্রতিষ্ঠানের নাম:
ইটাপোতা কলোনী জামে মসজিদ কম্প্লেক্স এন্ড তা’লিমুল কোরআন
নুরানী ও হাফিজিয়া মাদ্রাসা

    গ্রাম : ইটাপোতা
    ইউনিয়ন : মোগলহাট
    ডাকঘর : মোগলহাট, 5501
    উপজেলা/থানা : লালমনিরহাট
    জেলা : লালমনিরহাট
    বাংলাদেশ।

নোটিশ বোর্ড

শ্রেণি সমূহ

1. নুরানী শাখা

    ক. শিশু শ্রেণি
    খ. প্রথম শ্রেণি
    গ. দ্বিতীয় শ্রেণি
    ঘ. তৃতীয় শ্রেণি
    ঙ. চতুর্থ শ্রেণি
2. হিফজ শাখা
    ক. নাজেরা
    খ. হিফজ

কুরবানীর হুকুম ও বিধি বিধানঃ মুফতী তাহমীদ শামী- (২য় পর্ব)


৫১৷ মাসআলাঃ
#অন্যের_পক্ষ_থেকে_কুরবানী_করাঃ
কুরবানী শুধু নিজের পক্ষ থেকে ওয়াজিব হয়। পিতা-মাতা, স্ত্রী, সন্তানাদি ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের পক্ষ থেকে ওয়াজিব হয়না৷
তবে তাদের পক্ষ থেকে নিজ সম্পদ দ্বারা কুরবানী করলে সহীহ হবে৷ (সহীহুল বুখারী ১৭০৯ হাদীস৷ সুনানে ইবনে মাজাহ ৩১২২ হাদীস৷ সুনানে আবু দাউদ ২৭৯০ হাদীস৷
ফতোয়ায়ে শামী ৫/২০০ পৃষ্ঠা৷)

৫২৷ মাসআলাঃ
একান্নভুক্ত পরিবারে শুধু পরিবার কর্তার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে৷ তবে সাবালক ছেলে-মেয়ে বা অন্নান্য সদস্যরা যদি পৃথকভাবে নেসাব পরিমান সম্পদের মালিক হয় তাহলে প্রত্যেকের উপর পৃথকভাবে কুরবানী ওয়াজিব হবে। যেমন পিতার জিবদ্দশায় ছেলেরা যদি একই সাথে কারবার করে তবে তাদের সকলের মালকে বন্টন করে যদি প্রত্যেকের ভাগে নিসাব পরিমান সম্পদ হয়, তাহলে প্রত্যেকের উপর পৃথকভাবে কুরবানী ওয়াজিব হবে৷ (সুনানে ইবনে মাজাহ ৩১২৫, ৩১৩৫, ৩১৪৭ হাদীস৷ সুনানে তিরমিযী ১৫০৫ হাদীস৷ ফতোয়ায়ে শামী ৫/২০০ পৃষ্ঠা৷ ফতোয়ায়ে আলমগীরী ৫/২৯২ পৃষ্ঠা৷ আহসানুল ফতোয়া ৭/৫০৬ পৃষ্ঠা৷)

৫৩৷ মাসআলাঃ
কারো পক্ষ থেকে তার অনুমতি ব্যতীত ওয়াজিব কুরবানী করলে সহীহ হবেনা। অবশ্য একই পরিবারভুক্ত কোন সদস্য অন্য সদস্যের পক্ষ থেকে তার জ্ঞাতসারে নিয়মিত কুরবানী করলে সহীহ হবে৷ তবে প্রকাশ্যে অনুমতি নেওয়াই উত্তম। (সহীহুল বুখারী ১৭০৯ হাদীস৷ সুনানে ইবনে মাজাহ ৩১৩৩ হাদীস৷ আদ দুররুল মুখতার ৬/৩১৫ পৃষ্ঠা৷)

৫৪৷ মাসআলাঃ
হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পক্ষ থেকে কুরবানী করা উত্তম। যেমন হযরত আলী রাযিঃ হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ওসিয়ত অনুযায়ী প্রতিবছর তার পক্ষ থেকে কুরবানী করেছেন৷ (সুনানে তিরমিযী ১৪৯৫ হাদীস৷ সুনানে দাউদ ২৭৯০ হাদীস৷ মিশকাতুল মাসাবীহ ১৫৪২ হাদীস৷)

৫৫৷ মাসআলাঃ
ঈছালে সাওয়ারের উদ্দেশ্যে মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে নফল কুরবানী করা জায়েয হবে৷ তেমনিভাবে জীবিত ব্যক্তির পক্ষ থেকেও তার ঈসালে সাওয়াবের উদ্দেশ্যে নফল কুরবানী করা জায়েয হবে। আর উক্ত কুরবানীর গোশত সকলেই খেতে পারবে। (সুনানে আবু দাউদ ২৭৯০,২৮১০ হাদীস৷ সুনানে তিরমিযী ১৫২১ হাদীস৷ ফতোয়ায়ে শামী ৫/২০৭ পৃষ্ঠা৷ ফতোয়ায়ে কাযীখান ৩/৩৫২ পৃষ্ঠা৷)

৫৬৷ মাসআলাঃ
মৃত ব্যক্তির ওসিয়তকৃত করা কুরবানী ওয়াজিব৷ এবং সে কুরবানীর গোশত গরীব মিসকীনদের মাঝে সদকাহ করে দেওয়াও ওয়াজিব। (মুসনাদে আহমাদ ১/১০৭ পৃষ্ঠা৷ ফতোয়ায়ে শামী ৫/২০৮ পৃষ্ঠা৷ ইলাউস সুনান ১৭/২৬৮ পৃষ্ঠা৷ ফতোয়ায়ে কাযীখান ৩/৩৫২ পৃষ্ঠা৷)

৫৭৷ মাসআলাঃ
হজ্বের কুরবানী তথা হাদী নিজ দেশে করা জায়েয হবেনা৷ তবে মুকিম হজিদের ঈদুল আযহার কুরবানী নিজ দেশের বাড়িতে করা জায়েয হবে৷ (সহীহুল বুখারী ৫৫৬৬ হাদীস৷ সুনানে ইবনে মাজাহ ৩১৩৩ হাদীস৷ আহকামুল কুরআন ২/২৫-২৬ পৃষ্ঠা৷ ইলাউস সুনান ১০/৩৪০ পৃষ্ঠা৷ ফতোয়ায়ে শামী ২/৫৩২ পৃষ্ঠা৷ আদ দুররুল মুখতার ৬/৩১৫ পৃষ্ঠা৷)

৫৮৷ মাসআলাঃ
#কুরবানীর_সময়ঃ
যিলহজ্ব মাসের ১০, ১১, ১২ তারিখ এ তিন দিনই কুরবানী করা যায়। অর্থাৎ ১০ই যিলহজ্ব ঈদের নামাযের পর থেকে ১২ই জিলহজ্ব সূর্যাস্ত পর্যন্ত দিবারাত যে কোন সময়ই কুরবানী করা যায়৷ তবে ১ম দিন অর্থাৎ ১০ তারিখে কুরবানী করা সর্বোত্তম। তারপর দ্বিতীয় দিন৷ অতঃপর তৃতীয় দিন।
(মিশকাতুল মাসাবীহ ১৪৭৩ হাদীস৷ ফতোয়ায়ে তাতার খানিয়া ৩/৩৪৫ পৃষ্ঠা৷
ফতোয়ায়ে আলমগীরী ৫/২৯৬ পৃষ্ঠা৷ আহসানুল ফতোয়া ৭/৫১০ পৃষ্ঠা৷ আল হিদায়া ৪/৩৭৮ পৃষ্ঠা৷)

৫৯৷ মাসআলাঃ
ঈদের দিন ঈদের নামাযের পর কুরবানী করা ওয়জিব৷ তাই নামাযের পুর্বে কুরবানী করা জায়েয হবেনা৷ তবে কোন ওযরের কারনে যদি প্রথম দিন ঈদের নামায আদায় করতে না পারে, তাহলে ঈদের নামাযের সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পর কুরবানী করা জায়েয হবে৷ (সূরা কাউসার ২ আয়াত৷ সহীহুল বুখারী ৯৮৫, ৫৫৪৬ হাদীস৷ সুনানে ইবনে মাজাহ ৩১৫১ হাদীস৷ আদ দুররুল মুখতার ৬/৩১৮ পৃষ্ঠা৷)

৬০৷ মাসআলাঃ
ঈদের দিন ঈদের নামাযের পূর্বে কুরবানী করলে পুনরায় নামাযের পর কুরবানী করা ওয়াজিব হবে৷ তবে নামাযের পুর্বে যাবাইকৃত পশুটি সাধারণ পশু যাবাহের মত হবে এবং তার গোশত খাওয়া হালাল হবে৷ কিন্তু যেখানে ঈদের নামায ওয়াজিব নয়, সেখানে সুবহে সাদিকের পর থেকেই কুরবানী করা জায়েয হবে৷ (সহীহু বুখারী ৫৫৪৬ হাদীস৷ মুসলিম ৪৯৫৮, ৪৯৫৯ হাদীস৷ সুনানে ইবনে মাজাহ ৩১৫৩ হাদীস৷ ফতোয়ায়ে শামী ৫/২০২ পৃষ্ঠা৷ আশরাফুল হিদায়া ৯/৪৮৮ পৃষ্ঠা৷)

৬১৷ মাসআলাঃ
কুরবানীদাতা ও পশু এক স্থানে থাকা জরুরী নয়। বরং কুরবানীদাতা ভিন্ন দেশেও কুরবানী করতে পারবে। সেক্ষেত্রে পশু যে এলাকায় থাকবে সেই এলাকায় ঈদের নামাযের পরে কুরবানী করতে হবে। এক্ষেত্রে কুবোনীদাতার ঈদের নামাযের সাথে কুরবানীর কোন সম্পর্ক নেই। বরং পশু যে এলাকায় আছে সে এলাকার ঈদের নামাযই ধর্তব্য হবে। (সুনানে ইবনে মাজাহ ৩১৫৩ হাদীস৷ ফতোয়ায়ে শামী ৫/২০২ পৃষ্ঠা৷ আশরাফুল হিদায়া ৯/৪৯০ পৃষ্ঠা৷)

৬২৷ মাসআলাঃ
#কুরবানীর_পশু_জবায়ের_বিধানঃ
কুরবানীর পশুকে দক্ষিন দিকে মাথা দিয়ে কেবলামুখী করে শুয়ানো সুন্নাত। অতঃপর নিম্নের দুআটি পাঠ করা মুস্তাহাব -
ﺇِﻧِّﻲ ﻭَﺟَّﻬْﺖُ ﻭَﺟْﻬِﻲَ ﻟِﻠَّﺬِﻱ ﻓَﻄَﺮَ ﺍﻟﺴَّﻤَﺎﻭَﺍﺕِ ﻭَﺍﻟْﺄَﺭْﺽَ ﺣَﻨِﻴﻔﺎً ﻭَﻣَﺎ ﺃَﻧَﺎ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﻤُﺸْﺮِﻛِﻴﻦَ . ﺇِﻥَّ ﺻَﻼﺗِﻲ ﻭَﻧُﺴُﻜِﻲ ﻭَﻣَﺤْﻴَﺎﻱَ ﻭَﻣَﻤَﺎﺗِﻲ ﻟِﻠَّﻪِ ﺭَﺏِّ ﺍﻟْﻌَﺎﻟَﻤِﻴﻦَ ﻻ ﺷَﺮِﻳﻚَ ﻟَﻪُ ﻭَﺑِﺬَﻟِﻚَ ﺃُﻣِﺮْﺕُ ﻭَﺃَﻧَﺎ ﺃَﻭَّﻝُ ﺍﻟْﻤُﺴْﻠِﻤِﻴﻦَ.
তারপর “বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার” বলে জবাই করা ওয়াজিব৷ (সুনানে ইবনে মাজাহ ৩১২১ হাদীস৷ সুনানে তিরমিযী ১৫২১ হাদীস৷ সুনানে আবু দাউদ ২৭৯৫, ২৮১০ হাদীস৷ সুনানে দারিমী ১৯৮৪ হাদীস৷ মুসনাদে আহমাদ ১৪৪২৩ হাদীস৷)

৬৩৷ মাসআলাঃ
পশু জবাই করার সময় জবাইকারীর জন্য বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলে জবাই করা ওয়াজিব৷ যিনি জবাই কাজে সাহায্য করবে তার জন্যও বিমমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলা ওয়াজিব৷ সুতরাং জবাইকারীর মধ্যে যদি কোন একজন ইচছাকৃতভাবে বিসমিল্লাহ ছেড়ে দেয়, তবে কুরবানী সহীহ হবেনা এবং গোশত খাওয়াও হালাল হবেনা। তবে যারা পশু ধরবে তাদের জন্য বিসমিল্লাহ বলা ওয়াজিব নয় বরং মুস্তাহাব৷ (সূরা আনআম ১২১ আয়াত৷ সহীহুল বুখারী ৫৫৬৫ হাদীস৷ ইমদাদুল ফতোয়া ৩/৫৪০ পৃষ্ঠা৷)

৬৪৷ মাসআলাঃ
পশু জবেহের সময় ইচ্ছাকৃতভাবে বিসমিল্লাহ তরক করলে কুরবানী সহীহ হবেনা এবং এর গোশত খাওয়াও হালাল হবেনা৷ তবে ভুলে বিসমিল্লাহ ছুটে গেলে কুরবানী সহীহ হবে এবং গোশত খাওয়াও হালাল হবে৷ (সূরা মায়িদা ৩ আয়াত৷ সূরা আনআম ১২১ আয়াত৷ সুনানে আবু দাউদ ২৮১৯ হাদীস৷ সুনানে ইবনে মাজাহ ৩১৭৩ হাদীস৷ মুয়াত্তা মালিক ১০৩৩ হাদীস৷ আল হিদায়া ৪/১১৯ পৃষ্ঠা৷ আল কুদুরী ২/২২৭ পৃষ্ঠা৷ বেহেশতী জেওর ৬/২৪১ পৃষ্ঠা৷ জাওয়াহিরুল ফিকাহ ১/৪৫০ পৃষ্ঠা৷)

৬৫৷ মাসআলাঃ
হলক্ব ও কন্ঠের মধ্যখানে পশু জবাই করা সুন্নত৷ আর জবাইয়ের মধ্যে কমপক্ষে চারটি রগ কাটা ওয়াজিব৷
১৷ হলকুম- শ্বাসনালী৷
২৷ মারি- খাদ্যনালী৷
৩৷ অজীন- রক্তনালী৷
৪৷ অদজান- শাহরগ৷
এই চারটি রগের মধ্য হতে তিনটি রগ কাটলেও কুরবানী সহীহ হবে৷ কিন্তু তিনটি রগের কম কাটলে কুরবানী সহীহ হবেনা এবং গোশত খাওয়াও হালাল হবেনা। (সুনানে আবু দাউদ ২৮২৬ হাদীস৷ ইমদাদুল ফতোয়া ৩/৫৩৭ পৃষ্ঠা৷ আল কুদুরী ২/২২৯- ২৩০ পৃষ্ঠা৷ আল হিদায়া ৪/১২৩-১২৪ পৃষ্ঠা৷ মালাবুদ্ধা মিনহু ২৭২ পৃষ্ঠা৷)

৬৬৷ মাসআলাঃ
কুরবানীর পশু জবেহ করার সময় দেহ থেকে মাথা আলাদা করে ফেলা মাকরুহে তাহরীমী৷ কেননা তা মুশরিকদের জবেহের সাদৃশ্যতা৷ তবে ছুরি অধিক ধারালো হওয়ার কারনে অনিচ্ছায় মাথা আলাদা হয়ে গেলে মাকরুহ হবেনা৷ (মুয়াত্তা মালিক ১০৩৭ হাদীস৷ ফতোয়ায়ে তাতার খানিয়া ৩/৩৬৮ পৃষ্ঠা৷ ফতোয়ায়ে আলমগীরী ৫/২৮৬ পৃষ্ঠা৷ ইমদাদুল ফতোয়া ৩/৫৪৮ পৃষ্ঠা৷)

৬৭৷ মাসআলাঃ
কুরবানীর পশু নিজে জবাই করা সুন্নত। কেননা হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজ হাতে কুরবানীর পশু জবাই করতেন৷ তাছাড়া ইমাম বুখারী রহিঃ বলেছেনঃ হযরত আবু মুসা আশআরী রাযিঃ তার কন্যাদেরকে কুরবানীর পশু নিজ হাতে জবাই করতে নির্দেশ দিয়েছেন৷ তাই পুরুষ মহিলা উভয়ের জন্য কুরবানীর পশু নিজ হাতে জবাই করা সুন্নত৷ তবে নিজে জবাই করতে না পারলে কোন নেককার ব্যক্তির মাধ্যমে জবাই করানো উত্তম৷ আর এক্ষেত্রে কুরবানীদাতার জন্য জবাইস্থলে উপস্থিত থাকা মুস্তাহাব। তবে মহিলাদের পর্দার ব্যঘাত ঘটলে উপস্থিত হওয়া নিষিদ্ধ৷ (সহীহুল বুখারী ৫৫৫৮ হাদীস৷ সহীহু মুসলিম ৪৯৮১ হাদীস৷ সুনানে নাসায়ী ৪৪১৯ হাদীস৷ ফাতহুল বারী ১০/১৯ পৃষ্ঠা৷ ফতোয়ায়ে শামী ৫/২০৮ পৃষ্ঠা৷ ফতোয়ায়ে আলমগীরী ৫/৩০০ পৃষ্ঠা৷)

৬৮৷ মাসআলাঃ
জবাই করার নিয়ম জানলে নাবালেগ ছেলে মেয়েও কুরবানীর পশু জবাই করতে পারবে এবং কুরবানীও সহীহ হবে৷ (সহীহুল বুখারী ২৩০৪, ৫৫০১ হাদীস৷ সুনানে ইবনে মাজাহ ৩১৮২ হাদীস৷ আল হিদায়া ৪/১১৮ পৃষ্ঠা৷)

৬৯৷ মাসআলাঃ
কুরবানীর নিয়ত শুধু কুরবানীদাতার জন্য জরুরী৷ আর নিয়তের জন্য মনের এরাধাই যথেষ্ট৷ সুতরাং জবাইকারীর জন্য কুরবানীর নিয়ত করা বা
কুরবানী দাতাদের নামের লিষ্ট করা এবং জবেহের পুর্বে সে লিষ্টের নামগুলো উচ্চারন করা বিদআত হবে৷ অতএব তা পরিহার করা উচিত৷ (আল ফিকহুল ইসলামী ৪/৩০০ পৃষ্ঠা৷ আল হিদায়া ৪/১২২ পৃষ্ঠা৷)

৭০৷ মাসআলাঃ
সমাজের সকল কুরবানীর পশু একত্র করে একই স্থানে তথা ঈদগাহে বা মাঠে জবেহ করা মুস্তাহাব৷ কেননা ইসলামী সোনালীযুগে এমনটিই প্রচলিত ছিল৷ (সহীহুল বুখারী ৫৫৫২ হাদীস৷ সুনানে আবু দাউদ ২৮১১ হাদীস৷)

৭১৷ মাসআলাঃ
পশু জবাইয়ের পর জান বের হবার পূর্বে চামড়া ছোলা, রগ কাটা, ছুরি দিয়ে গলার হাড্ডিতে আঘাত করা বা অন্য কোন অঙ্গ কাটা ইত্যাদি মাকরূহে তাহরীমী। অতএব তা পরিহার করা উচিত৷ (সহীহু মুসলিম ৪৯৪৯ হাদীস৷ সুনানে নাসায়ী ৪৪০৫ হাদীস৷ সুনানে ইবনে মাজাহ ৩১৭০ হাদীস৷ সুনানে তিরমিযী ১৪০৯ হাদীস৷ ফতোয়ায়ে কাসেমীয়া ১/৩৬০ পৃষ্ঠা৷)

৭২৷ মাসআলাঃ
এক পশুর সামনে অন্য পশু জবাই করা মাকরুহ৷ কেননা এতে পশুর মনে ভয় ও আতংক সৃষ্টি হয়৷ অনুরুপভাবে পশুর সামনে ছুরি ধার দেয়াও মাকরুহ৷ তাতেও পশুর মনে ভয় ও আতংক সৃষ্টি হয়৷ আর পশুর মনে ভয় ও আতংক সৃষ্টি করতে ইসলাম নিষেধ করেছে৷ (সহীহু মুসলিম ৪৯৪৯ হাদীস৷ সুনানে ইবনে মাজাহ ৩১৭২ হাদীস৷ সুনানে আবু দাউদ ২৮১৪ হাদীস৷ সুনানে নাসায়ী ৪৪০৫ হাদীস৷ ইমদাদুল ফতোয়া ৩/৫৪৭ পৃষ্ঠা৷)

৭৩৷ মাসআলাঃ
ধারালো ছুরি দ্বারা পশু জবাই করা সুন্নত৷ আর ভোতা ছুরি দ্বারা পশু জবাই করা মাকরুহ৷ কেননা এতে পশুর কষ্ট হয়৷ আর পশুকে কষ্ট দিতে হাদীসে নিষেধ করা হয়েছে৷ (সহীহু মুসলিম ৪৯৪৯ হাদীস৷ সুনানে দাউদ ২৮১৪ হাদীস৷ সুনানে নাসায়ী ৪৪০৫ হাদীস৷ ইমদাদুল ফতোয়া ৩/৫৪৭ পৃষ্ঠা৷ বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৩ পৃষ্ঠা৷)

৭৪৷ মাসআলাঃ
কুরবানী পশু জবাই করে পারিশ্রমিক নেওয়া জায়েয হবে। বরং এটা জবেহকারীর হকও বটে৷ তবে কুরবানীর গোশত বা পশুর কোনো কিছু দ্বারা পারিশ্রমিক দেওয়া জায়েয হবেনা৷ (সহীহুল বুখারী ১৭১৬ হাদীস৷ বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৪ হাদীস৷ আল বাহরুর রায়েক ৮/৩২৬ হাদীস৷ ফতোয়ায়ে রহমানিয়া ১/৪৯৮ পৃষ্ঠা৷)

৭৫৷ মাসআলাঃ
কসাই বা গোশত কাটার কাজে সাহায্যকারীকে চামড়া, গোশত, পায়া বা কুরবানীর পশুর অন্য কোন অংশ পারিশ্রমিক হিসেবে দেওয়া জায়েয হবেনা। কেউ দিলে তার মূল্য সদকাহ করা ওয়াজিব হবে৷ তবে পূর্ন পারিশ্রমিক দেওয়ার পর পূর্বচুক্তি ব্যতীত গোশত বা পশুর অন্য কোন অংশ দেওয়া উত্তম হবে৷ (সহীহুল বুখারী ১৭১৬ হাদীস৷ আহকামুল কুরআন ৩/২৩৭ পৃষ্ঠা৷ আল বাহরুর রায়েক ৮/৩২৬ পৃষ্ঠা৷ ফতোয়ায়ে কাযীখান ৩/৩৫৪ পৃষ্ঠা৷)

৭৬৷ মাসআলাঃ
#কুরবানীর_গোশতের_বিধানঃ
কুরবানীর গোশত তিনভাগ করা সুন্নত৷
১৷ একভাগ নিজের জন্য৷
২৷ একভাগ আত্মীয়-সজনের জন্য৷
৩৷ একভাগ গরীব-মিসকীনের জন্য৷
অবশ্য কেউ যদি পুরো গোশত নিজে রাখে বা পুরো গোশত বিলিয়ে দেয় তবে তাও জায়েয হবে। (সূরা হজ্ব ২৮ আয়াত৷ ফতোয়ায়ে আলমগীরী ৫/৩০০ পৃষ্ঠা৷ বেহেশতী জেওর ৩/২৯৯ পৃষ্ঠা৷)

৭৭৷ মাসআলাঃ
কুরবানীদাতার জন্য নিজ কুরবানীর গোশত খাওয়া সুন্নত। আর কুরবানীর প্রথম দিন সকাল থেকে কোন কিছু না খেয়ে নিজ কুরবানীর গোশত দ্বারা খানা শুরু করা সুন্নাত। হযরত রাসূলে কারীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কুরবানীর দিন নিজ কুরবানীর গোশত দ্বারা খানা শুরু করতেন। তবে যিলহজ্বের ১১- ১২ তারিখে নিজ কুরবানীর গোশত দ্বারা খানা শুরু করা সুন্নাত নয়। বরং এ সুন্নত কেবল ১০-তারিখের জন্য খাস। (সূরা হজ্ব ২৮ আয়াত৷
তিরমিযী শরীফ ১/১২০ পৃষ্ঠা৷ আদ দুররুল মুখতার ২/১৭৬ পৃষ্ঠা৷ আল বাহরুর রায়িক ২/১৬৩ পৃষ্ঠা৷)

৭৮৷ মাসআলাঃ
শরীক হয়ে কুরবানী করলে গোশত অনুমান করে ভাগ করা জায়েয হবেনা। বরং নিক্তি দ্বারা মেপে ভাগ করতে হবে৷ তবে যে ভাগে মাথা,পা ইত্যাদি থাকবে সে ভাগে গোশত কম হলেও সমস্যা হবেনা৷ (আদ দুররুল মুখতার ৬/৩১৭ পৃষ্ঠা৷ ফতোয়ায়ে কাযীখান ৩/৩৫১ পৃষ্ঠা৷ বেহেশতী জেওর ৩/২৯৭ পৃষ্ঠা৷)

৭৯৷ মাসআলাঃ
#কুরবানীর_গোশত_সংরক্ষন_করাঃ
কুরবানীর গোশত সংরক্ষন করা বা শুটকি দিয়ে জমিয়ে রাখা জায়েয হবে। এমনকি ফ্রিজে সংরক্ষন করে সারা বছর খাওয়াও জায়েয হবে৷ (সহীহু মুসলিম ৪৯৯৭ হাদীস৷ সুনানে ইবনে মাজাহ ৩১৫৯ হাদীস৷ সুনানে তিরমিযী ১৫১১ হাদীস৷ ফতোয়ায়ে কাসেমীয়া ১/৩৫৭ পৃষ্ঠা৷)

৮০৷ মাসআলাঃ
#কুরবানীর_গোশত_অমুসলিমকে_দেয়াঃ
কুরবানীর গোশত অমুসলিমকে দেওয়া জায়েয হবে৷ বরং ক্ষেত্র বিশেষে দেওয়াটা উত্তমও বটে। তাই প্রতিবেশী হিন্দুদেরকেও কুরবানীর গোশত দেওয়া যাবে৷ (ইলাউস সুনান ১৭/২৫৮ পৃষ্ঠা৷ আল মুহীতুল বুরহানী ৮/৪৬৯ পৃষ্ঠা৷ ফতোয়ায়ে আলমগীরী ৫/৩০০ পৃষ্ঠা৷ ফতোয়ায়ে তাতার খানিয়া ১৭/৪৩৭ পৃষ্ঠা৷)

৮১৷ মাসআলাঃ
#কুরবানীর_গোশত_বিক্রি_করাঃ
কুরবানীর গোশত বিক্রি করা জায়েয হবেনা৷ কেউ বিক্রি করলে তার কুরবানী সহীহ হবেনা৷ (ইলাউস সুনান ১৭/২৫৯ পৃষ্ঠা৷ বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৫ পৃষ্ঠা৷ ফতোয়ায়ে কাযীখান ৩/৩৫৪ পৃষ্ঠা৷ ফতোয়ায়ে মাহমুদিয়া ৪/৩০৯ পৃষ্ঠা৷)

৮২৷ মাসআলাঃ
কুরবানীর পশুর কোন অংশ কুরবানীদাতার জন্য বিক্রি করা জায়েয হবেনা। কেউ কোন কিছু বিক্রি করলে তার মুল্য সদকাহ করা ওয়াজিব হবে। অনুরূপভাবে কুরবানীদাতার নিকট থেকে কুরবানীর পশুর কোন কিছু ক্রয় করাও জায়েয হবেনা৷ অনেক সময় গরীব মিসকীনেরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে হাড় চর্বি ইত্যাদি সংগ্রহ করে। অতঃপর তা বিক্রি করে। তা জায়েয হবে। মোটকথা কুরবানীদাতা কোন কিছু বিক্রি করতে পারবে না। (ইলাউস সুনান ১৭/২৫৯ পৃষ্ঠা৷ বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৫ পৃষ্ঠা৷ ফতোয়ায়ে কাযীখান ৩/৩৫৪ পৃষ্ঠা৷ ফতোয়ায়ে আলমগীরী ৫/৩০১ পৃষ্ঠা৷)

৮৩৷ মাসআলাঃ
#কুরবানীর_পশুর_দশটি_জিনিস_খাওয়া_হারামঃ
১৷ প্রবাহিত রক্ত৷
২৷ প্রস্রাব৷
৩৷ পায়খানা৷
৪৷ পুলিঙ্গ৷
৫৷ স্ত্রীলিঙ্গ৷
৬৷ মুত্রথলি৷
৭৷ অন্ডোকোষ৷
৮৷ রগ৷
৯৷ পিত্তি/পিন্ড৷
১০৷ মাংসগ্রন্থি/টিউমার৷
(ইমদাদুল ফতোয়া ৪/১১৮ পৃষ্ঠা৷ ফতোয়ায়ে শামী ৫/২১৯ পৃষ্ঠা৷ ফতোয়ায়ে জামেয়া ৫/২৩৮ পৃষ্ঠা৷ ফতোয়ায়ে কাসেমীয়া ১/৩৫৯ পৃষ্ঠা৷ তাহতাবী ৪/৩৬০ পৃষ্ঠা৷)

৮৪৷ মাসআলাঃ
#সামাজিক_গোশতের_বিধানঃ
অনেক সমাজে এরুপ প্রচলন রয়েছে যে, সমাজের প্রতিটি কুরবানীর পশুর গোশতের একতৃতীয়াংশ গোশত সমাজিক গোশত নামে একত্রিত করা হয়৷ অতপর সে গোশত বন্টন করে সমাজভুক্ত সকলকে দেয়া হয়৷ উদ্দেশ্য হলো সমাজের বাতৃত্ববন্ধন ঠিক রাখা৷ এ পদ্ধতি জায়েয হওয়ার জন্য শর্ত হলো- কুরবানীদাতাগণ যদি কোন প্রকার চাপ সৃষ্টি ব্যতীত স্বতঃস্ফুর্তভাবেই কুরবানীর এক তৃতীয়াংশ গোশত সামাজিক বন্টনে দিতে রাজি হয়৷ তবে উক্ত পদ্ধতি জায়েয হবে এবং উক্ত সামাজিক গোশত ধনী-গরীব সকলেই নিতে পারবে এবং সকলেই খেতে পারবে৷ কেননা এ গোশত জমা করার পুর্বেই সকলের এরুপ নিয়ত ছিল যে, আমরা সকলেই উক্ত গোশত থেকে কিছু করে অংশ নেবো৷ সুতরাং সামাজিক গোশত সদকাহ বা দান হিসেবে গন্য হবেনা৷ তবে খেয়াল রাখতে হবে মান্নতের কুরবানী এবং মৃত ব্যক্তির ওসীয়তকৃত কুরবানীর গোশত যেন জমা করা না হয়৷ কেননা তা কুরবানীদাতাদের জন্য খাওয়া জায়েয হবেনা৷ আর সামাজিক গোশত বন্টনের পুর্বে কারো জন্য নেয়া জায়েয হবেনা এবং বন্টনের পরেও অন্যের ভাগ থেকে নেয়া জায়েয হবেনা৷ (সুনানে ইবনে মাজাহ ৩১৫৮ হাদীস৷ ফতোয়ায়ে আলমগীরী ৫/৩০১ পৃষ্ঠা৷ ফতোয়ায়ে কাসেমীয়া ১/৩৫৬ পৃষ্ঠা৷ ফতোয়ায়ে মাদানিয়া ৫/৩৬৫ পৃষ্ঠা৷ খুলাসাতুল ফতোয়া ৪/৩২১ পৃষ্ঠা৷)

৮৫৷ মাসআলাঃ
#কুরবানীর_পশুর_চামড়ার_বিধানঃ
কুরবানীর পশুর চামড়া পরিশোধন করে নিজে ব্যবহার করা জয়েয হবে৷ তবে কেউ যদি বিক্রি করে তবে তার পুরো মুল্য সদকাহ করা ওয়াজিব হবে৷ (সহীহু মুসলিম ৪৯৯৭ হাদীস৷ ইমদাদুল ফতোয়া ৩/৪৮৯ পৃষ্ঠা৷ ফতোয়ায়ে আলমগীরী ৫/৩০১ পৃষ্ঠা৷)

৮৬৷ মাসআলাঃ
কুরবানীর পশুর চামড়ার মুল্য সদকাহ করার নিয়তে বিক্রি করা জায়েয হবে। তবে নিজে খরচ করার নিয়তে বিক্রি করা জায়েয হবেনা। তবে যে নিয়তেই বিক্রি করুক না কেন সর্বাবস্থায়ই তার মূল্য সদকাহ করা ওয়াজিব হবে। সহীহুল বুখারী ১৭০৭ হাদীস৷ সুনানে মাজাহ ৩১৫৭ হাদীস৷ ইমদাদুল ফতোয়া ৩/৫৫২ পৃষ্ঠা৷ ফতোয়ায়ে কাযীখান ৩/৩৫৪ পৃষ্ঠা৷)

৮৭৷ মাসআলাঃ
কুরবানীর পশুর চামড়ার মুল্য হুবহু সদকাহ করা জরুরী। তাই চামড়ার মূল্য নিজ প্রয়োজনে খরচ করে পরে নিজে থেকে দিলে আদায় হবে বটে কিন্তু গোনাহ হবে। (সহীহুল বুখারী ১৭০৭ হাদীস৷ সুনানে মাজাহ ৩১৫৭ হাদীস৷ ইমদাদুল ফতোয়া ৩/৫৫২ পৃষ্ঠা৷ ফতোয়ায়ে কাযীখান ৩/৩৫৪ পৃষ্ঠা৷)

৮৮৷ মাসআলাঃ
কুরবানীর পশুর চামড়া দেহ থেকে আলাদা করার পুর্বে ক্রয়-বিক্রয় করা জায়েয হবেনা। সুতরাং এরুপ ক্রয়-বিক্রয় পরিহার করা উচিত৷ (সুনানে তিরমিযী ১২৩০ হাদীস৷ ফতোয়ায়ে শামী ৭/১৫ পৃষ্ঠা৷ ফতোয়ায়ে আলমগীরী ৩/১৯ পৃষ্ঠা৷)

৮৯৷ মাসআলাঃ
আত্মীয়-স্বজন যদি গরীব হয় তবে তাদেরকে চামড়ার মূল্য দেয়া উত্তম। কেননা তাতে দ্বিগুন সাওয়াব রয়েছে৷
১৷ দানের সাওয়াব৷
২৷ আত্নীয়তা সম্পর্ক রক্ষার সাওয়াব। (সুনানে ইবনে মাজাহ ১৮৪৪ হাদীস৷ মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা ৬/৫৪২- ৫৪৬ পৃষ্ঠা৷ বেহেশতী জেওর ৩/২৯৩ পৃষ্ঠা৷ ফতোয়া ও মাসায়িল ৪/১০০-১০১ পৃষ্ঠা৷)

৯০৷ মাসআলাঃ
কুরবানীর চামড়ার মূল্য এমন দরিদ্র ব্যক্তিকে দেয়া সর্বাধিক উত্তম যে দ্বীনদার বা তালিবুল ইলম৷ কেননা এতে ইলমেদ্বীনের সহযোগীতা করার কারনে সদকায়ে জারিয়ার সাওয়াব রয়েছে৷ যা মৃত্যুর পরেও জারি থাকবে৷ (সুনানে ইবনে মাজাহ ৩১৫৭ হাদীস৷ সহীহুল বুখারী ১৭০৭, ১৭১৬ হাদীস৷ ফতোয়ায়ে কাসেমীয়া ১/৩৬১ পৃষ্ঠা৷ ফতোয়ায়ে রহমানিয়া ১/৫০২ পৃষ্ঠা৷)

৯১৷ মাসআলাঃ
কুরবানীর চামড়ার মুল্য মাসজিদ-মাদরাসার কাজে ব্যবহার করা বা রাস্তাঘাট নির্মাণ করা কিংবা কোন স্থাপনা তৈরী করা অথবা মাসজিদ মাদরাসার স্টাফদের বেতন দেয়া ইত্যাদি জায়েয হবেনা।
(সুনানে ইবনে মাজাহ ৩১৫৭ হাদীস৷ সহীহুল বুখারী ১৭০৭, ১৭১৬ হাদীস৷ ফতোয়ায়ে কাসেমীয়া ১/৩৬১ পৃষ্ঠা৷ ফতোয়ায়ে রহমানিয়া ১/৫০২ পৃষ্ঠা৷)

৯২৷ মাসআলাঃ
#কুরবানীর_পশু_হারিয়ে_গেলে_করনীয়ঃ
কুরবানীর পশু ক্রয় করার পর যদি হারিয়ে যায় বা মারা যায় কিংবা চুরি হয়ে যায়, তবে কুরবানীদাতা ধনী হলে অর্থাৎ তার উপর কুরবানী ওয়াজিব হলে আরেকটি পশু কুরবানী করা ওয়াজিব হবে৷ আর কুরবানীদাতা গরীব হলে আরেকটি পশু কুরবানী করা ওয়াজিব হবেনা।(সুনানে বায়হাকী ৫/২৪৪ পৃষ্ঠা৷ খোলাসাতুল ফতোয়া ৪/৩১৯ পৃষ্ঠা৷ বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১৬ পৃষ্ঠা৷)

৯৩৷ মাসআলাঃ
কুরবানীর পশু হারানো বা চোরি হওয়ার পর আরেকটি পশু ক্রয় করার পর যদি হারানো পশুটিও পাওয়া যায় তবে কুরবানীদাতা গরীব হলে তথা যার উপর কুরবানী ওয়াজিব নয় তার জন্য দুটো পশুই কুরবানী করা ওয়াজিব হবে। আর ধনী হলে যে কোনো একটি পশু কুরবানী করলেই যথেষ্ট হবে। তবে উভয়টি কুরবানী করা উত্তম। (সুনানে বায়হাকী ৫/২৪৪ পৃষ্ঠা৷ ইলাউস সুনান ১৭/২৮০ পৃষ্ঠা৷ বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৯ পৃষ্ঠা৷ ফতোয়ায়ে কাযীখান ৩/৩৪৭ পৃষ্ঠা৷

৯৪৷ মাসআলাঃ
#কুরবানী_না_করে_মূল্য_সদকাহ_করার_বিধানঃ
অনেকে এরুপ ধারনা রাখে যে, কুরবানীর দিন এতো পশু কুরবানী না করে এর মূল্য গরীবদের মাঝে দান করে দিলে তো গরীবদের বেশী ফায়দা হবে৷ তাদের এ ধ্যান ধারনা গর্হিত৷ কেননা কুরবানীর বিধানদাতা স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা৷ আর আল্লাহর বিধানে ক্ষুদ তালাশ করা কুফরী৷ সুতরাং এরুপ মনোভাব পরিহার করা উচিত৷ (আদ দুররুল মুখতার ৬/২২৫ পৃষ্ঠা আল কুদুরী ২/২৩৫- ২৩৭ পৃষ্ঠা৷ আল হিদায়া ৪/৪৪৭ পৃষ্ঠা৷ ফতোয়ায়ে রহমানিয়া ১/৫০০ পৃষ্ঠা৷)

৯৫৷ মাসআলাঃ
#কুরবানীর_কাযাঃ
কারো উপর কুরবানী ওয়াজিব হওয়া সত্যেও যদি কোন কারণবশতঃ কুরবানীর দিনগুলোতে কুরবানী করতে না পারে, তবে তার জন্য কুরবানীর উপযুক্ত একটি ছাগল/ভেড়া বা গরুর একসপ্তমাংশ কিংবা তার মূল্য সদকাহ করা ওয়াজিব হবে৷
আর কেউ পশু ক্রয় করার পরও যদি কুরবানী করতে না পারে, তবে তার জন্য ঐ পশুটিই জীবীত সদকাহ করা ওয়াজিব হবে। (ফতোয়ায়ে কাযীখান ৩/৩৪৫ পৃষ্ঠা৷ ফতোয়ায়ে কাসেমীয়া ১/৩৬৮ পৃষ্ঠা৷ বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৪ পৃষ্ঠা৷)

৯৬৷ মাসআলাঃ
কেউ কুরবানীর দিনগুলো অতিক্রান্ত হয়ে যাওয়ার পর যদি পশু জবাই করে, তবে পুরো গোশত সদকাহ করে দেওয়া ওয়াজিব হবে। তবে এক্ষেত্রে যদি গোশতের মুল্য জীবীত পশুর থেকে কমে যায়, তবে ঐ হ্রাসকৃত মুল্যও সদকাহ করা ওয়াজিব হবে। (আদ দুররুল মুখতার ৬ /৩২০ পৃষ্ঠা৷ আশরাফুল হিদায়া ৯/৪৯৭ পৃষ্ঠা৷ বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৪ পৃষ্ঠা৷)

৯৭৷ মাসআলাঃ
কারো যদি কয়েক বছরের কুরবানী কাযা হয়ে থাকে, তবে প্রতি বছরের জন্য একটি ছাগল বা উহার মূল্য সদকাহ করা ওয়াজিব হবে৷ (ফতোয়ায়ে কাযীখান ৩/৩৪৫ পৃষ্ঠা৷ ফতোয়ায়ে কাসেমীয়া ১/৩৬৮ পৃষ্ঠা৷ বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৪ পৃষ্ঠা৷)

৯৮৷ মাসআলাঃ
#হাস_মুরগী_কুরবানী_করাঃ
কোনো কোনো এলাকায় কুরবানীর দিন দরিদ্রদের মাঝে হাস মুরগী কুরবানীর প্রচলন রয়েছে। এটি সম্পূর্ণ নাজায়েয ও বিদআত। তবে কুরবানীর নিয়ত ব্যতীত হাস-মুরগী বা অন্য কোন প্রাণী জবাই করা জায়েয হবে৷ (সহীহুল বুখারী ৫৫৪৯ হাদীস৷ সহীহু মুসলিম ৪৯৬৪ হাদীস৷ সুনানে ইবনে মাজাহ ৩১৫৪ হাদীস৷ মুসনাদে আহমাদ ২০২১০ হাদীস৷ খুলাসাতুল ফতোয়া ৪/৩১৪ পৃষ্ঠা৷ ফতোয়ায়ে বাযযাযিয়া ৬/২৯০ পৃষ্ঠা৷)

৯৯৷ মাসআলাঃ
কুরবানীর দিন সমূহে কুরবানী ব্যতীত গরু ছাগল ইত্যাদি জবাই করা জায়েয হবে৷ তবে ১০ই জিলহজ্ব ঈদের নামাযের পুর্বে জবেহ করা মাকরুহ হবে৷ কেননা তা কুরবানীর সাদৃশ্যতা হওয়ায় ধোকার আশংকা রয়েছে৷ (সহীহু মুসলিম ৪৯৬৩ হাদীস৷ সুনানে আবু দাউদ ২৮০০ হাদীস৷ ফতোয়ায়ে বাযযাযিয়া ৬/২৯০ পৃষ্ঠা৷ খুলাসাতুল ফতোয়া ৪/৩১৪ পৃষ্ঠা৷)

১০০৷ মাসআলাঃ
#ঈদের_দিন_অর্ধবেলা_রোযাঃ
অনেক এলাকায় ঈদের দিন পশু জবেহের আগ পর্যন্ত রোযা রাখার প্রচলন রয়েছে৷ অথচ শরীয়তে দিনের অংশ বিশেষে রোযা রাখার কোন বিধান নেই৷ সুতরাং তা বিদআত৷ তাছাড়া শরীয়তের বিধান হলো ঈদের দিন রোযা রাখা হারাম৷ (সুনানে আবু দাউদ ২৪১৬, ২৪১৮ হাদীস৷ সুনানে নাসায়ী ২৩৭৩, ২২৫৭ হাদীস৷ মুসতাদরাকে হাকীম ১১২৭ হাদীস৷ তিরমিযী শরীফ ১/১২০ পৃষ্ঠা৷ বাদায়েউস সানায়ে ১/৩২৪ পৃষ্ঠা৷ আল বাহরুর রায়িক ২/১৬৩ পৃষ্ঠা৷)
ﻭﺍﻟﻠﻪ ﺍﻋﻠﻢ ﺑﺎﻟﺼﻮﺍﺏ .
'
_________//
#সৌজন্যেঃ
আত তাহমীদ ইসলামীক রিসার্চ সেন্টার বাংলাদেশ

No comments:

Post a Comment